ছাব্বিশ দিন নিষিদ্ধ থাকার পর হাইকোর্টের রায়ে মুক্তি পেয়েছে বই। দুই বাংলায় এই বইয়ের (পশ্চিমবঙ্গে ‘দ্বিখণ্ডিত’, বাংলাদেশে ‘ক’) কারণে দুজন লেখক তাঁর বিরুদ্ধে মোট একুশ কোটি টাকার মামলা রুজু করেছেন।
দীর্ঘ নির্বাসন জীবনে তসলিমা নাসরিন প্রচুর পুরস্কার এবং সম্মান অর্জন করেছেন। এর মধ্যে আছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট থেকে মুক্তচিন্তার জন্য শাখারাভ পুরস্কার, সহিষ্ণুতা ও শান্তি প্রচারের জন্য ইউনেস্কো পুরস্কার, ফরাসি সরকারের মানবাধিকার পুরস্কার, ধর্মীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ফ্রান্সের এডিট দ্য নান্ত পুরস্কার, সুইডেনের লেখক সংস্থা থেকে কুর্ট টুখোলস্কি পুরস্কার, জার্মানির মানববাদী সংস্থার আরউইন ফিশার পুরস্কার, নারীবাদ বিষয়ে লেখালেখির কারণে ফ্রান্সের সিমোন দ্য বোভোয়া পুরস্কার এবং আমেরিকার ফেমিনিস্ট প্রেস পুরস্কার। বেলজিয়ামের গেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লোভেইন, আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব প্যারিস এবং প্যারিস ডিডেরো ইউনিভার্সিটি থেকে পেয়েছেন সাম্মানিক ডক্টরেট। ফেলোশিপ পেয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ভারত থেকে নির্বাচিত কলাম এবং আমার মেয়েবেলা গ্রন্থের জন্য দু-বার আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন। ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, ইতালীয়-সহ মোট তিরিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তসলিমার বই। মানববাদ, মানবাধিকার, নারী-স্বাধীনতা ও নাস্তিকতা বিষয়ে তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন মঞ্চে এবং হার্ভার্ড, ইয়েল, অক্সফোর্ড, এডিনবরা, সরবোর্ন-এর মতো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সারা বিশ্বে তিনি একটি আন্দোলনের নাম।
কলকাতায় স্থায়ীভাবে তিন বছর বসবাসের পর তাঁর ওপর মৌলবাদী হামলার ফলস্বরূপ ২০০৮ সালে তিনি ভারত ত্যাগ করতে বাধ্য হন। তবে গত বছর তিনি ভারতে বাস করার অনুমতি পেয়েছেন। এখনও তিনি যাযাবর জীবনযাপন করছেন। ফেরার অপেক্ষা করছেন বাংলাদেশে অথবা পশ্চিমবঙ্গে।
তেরো বছর বয়স থেকে তসলিমার কবিতা লেখার শুরু। চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে পড়ার সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগে সম্পাদনা ও প্রকাশ করতেন সেঁজুতি নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা। এরপর প্রকাশিত হয়েছে আরও বারোটি কাব্যগ্রন্থ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: বালিকার গোল্লাছুট (১৯৯২), আয় কষ্ট কেঁপে, জীবন দেবো মেপে (১৯৯৪), নির্বাসিত নারীর কবিতা (১৯৯৬), জলপদ্য (২০০০), খালি খালি লাগে (২০০৪), কিছুক্ষণ থাকো (২০০৫) এবং বন্দিনী (২০০৮)।
Reviews
There are no reviews yet.