• 0 Items - 0.00
    • No products in the cart.
Sale

716.00

অদ্বিতীয় বিবেকানন্দ (দ্বিতীয় খণ্ড) / ADWITIYA VIVEKANANDA (2ND PART)

9789382300922

১১ ফ্রেব্রুয়ারি ১৮৮৬। সন্ধে সাড়ে সাতটায় গলার ব‌্যথায় কাতর ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ একটুকরো কাগজ আর পেনসিল চেয়ে নিয়ে লিখলেন_‌‘নরেন শিক্ষে দিবে।’ সাড়ে ঊনচল্লিশ বছরের স্বল্পায়ু জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নরেন গুরুপ্রদত্ত সে দায়িত্বিই পালন করে গিয়েছিলেন অক্ষরে অক্ষরে। সভ‌্যতার শুরু থেকে আজ অবধি তাঁর মতো মানবতাবাদী কোনো অগ্নিপুরুষ আবির্ভূত হননি এই পৃথিবীতে। তিনি এক। একক। অদ্বিতীয়। বিবেকানন্দ কোনো ব‌্যক্তি নন, তিনি স্বয়ং বিপ্লব, এক সামগ্রিক আধ‌্যাত্মিক অভ‌্যুত্থান। ভারতীয় সভ‌্যতার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ‌্যৎ-কে তিনি গেঁথেছেন অভিন্ন সূত্রে, প্রাচ‌্যকে জুড়েছেন প্রতীচ‌্যের সঙ্গে, পশ্চিমের কর্মোন্মাদনাকে কর্মযোগে উত্তরিত করে মিলিয়েছেন পুবের অধ‌্যাত্মবাদী আত্মনিমগ্নতার সঙ্গে। ভগ্ন, তুচ্ছ, আত্মগ্লানিময় নিঃসঙ্গ মানুষকে করে তুলেছেন আত্মপ্রত‌্যয়ী, বিশ্বাস করতে শিখিয়েছেন, ‘আমিই সে।’ পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম লোকশিক্ষক, যিনি তাঁর সহমানবদের কোনো পাপের উত্তরাধিকারী বলে মনে করেননি_যেহেতু, তিনি জানতেন, আমরা সবাই অমৃতের পুত্র। উনিশ শতকের অন্তিম পর্ব থেকে আজ অবধি দেশেবিদেশে বহু গবেষক বিবেকানন্দকে জানার চেষ্টা করেছেন, করে চলেছেন। কিন্তু বিরামহীন এই অনুসন্ধানের পরেও স্বামীজির জীবন ও কর্মের এক নির্ভরযোগ‌্য, পরিপূর্ণ চিত্র এঁকে ফেলা সম্ভব হয়নি। কিন্তু উল্লেখযোগ‌্য ব‌্যতিক্রম (উচ্চমার্গীয় ভাষা ও সাহিত‌্যগুণের কারণে যাদের অধিকাংশই সাধারণ পাঠকের নাগালের বাইরে) বাদ দিলে প্রায় সব ক্ষেত্রেই কোথাও তথ‌্যে ঘাটতি পড়েছে, কোথাও সস্তা মনোরঞ্জনের তাগিদে অভাব রয়ে গেছে অবলোকনের পদ্ধতিতে। সাধারণ মানুষের কাছে তাদের প্রাণাধিক প্রিয় বিবেকানন্দ বহুলাংশে, অচেনাই রয়ে গেছেন। এই গ্রন্থ সেই অপরিচয়ের বাধা দূর করবে। স্বামীজি রচিত প্রায় সব ক-টি পত্র যেমন এ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত, তেমনই এর দুইটি খণ্ডে স্থান পেয়েছে বিবেকানন্দ-জীবনের এতাবৎ গবেষণালব্ধ প্রায় সমস্ত তথ‌্য। সরল গদ‌্যে বিবেকানন্দের মহাকাব‌্যিক জীবনের এমন তথ‌্যনিষ্ঠ, পুর্ণাঙ্গ ধারাবিবরণী বাংলাভাষায় এই প্রথম।

শ্রীআনন্দর জন্ম ১৩৬৪ বঙ্গাব্দের ১০ শ্রাবণ, কলাকাতায়। পিতা অনিল দাস, মাতা সবিতা দাস মুখোপাধ‌্যায়। মাধ‌্যমিক ও উচ্চমাধ‌্যমিক স্তরের পড়াশোনা যথাক্রমে দমদমের সেন্ট মেরিজ স্কুল এবং ফলতার বেলসিংহ শিক্ষায়তনে। বঙ্গবাসী কলেজ থেকে নৃতত্ত্বে স্নাতক শ্রীআনন্দ হোমিয়োপ‌্যাথিতে ডিএমএস করেছেন। তৎসহ লাভ করেছেন আয়ুর্বেদ ও যোগব‌্যায়াম শিক্ষা। বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও ছোটোবেলা থেকেই তাঁর অনুরাগ বাংলা সাহিত‌্য ও সংগীতের প্রতি। রতন দাস নামে তিনি বাংলা সংগীত জগতের একজন উল্লেখযোগ‌্য গীতিকার, যাঁর কথায় সুরারোপ করেছেন অভিজিৎ বন্দ‌্যেপাধ‌্যায়-সহ বহু বরেণ‌্য সুরকার গান গেয়েছেন হেমন্ত মুখোপাধ‌্যায়ের মতো অনেকানেক কিংবদন্তী কন্ঠশিল্পী। পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার লোকগীতি নিয়ে শ্রীআনন্দ বিরচিত ‘বাংলার মাটি’ ও ‘বাংলার গান’ একটি অমূল‌্য গীতিসংগ্রহ। গান লেখা ও গান নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত লিখে চলেছেন প্রবন্ধ ও ছোটোগল্প। বহুভাষাবিদ (হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি, জার্মান) শ্রীআনন্দের জীবনের দীর্ঘ সময় কেটেছে প্রবাসে, অনুবাদকের পেশার সুবাদে। দেশে ফিরেও দিল্লিপ্রবাসী হয়ে থাকা প্রায় দু-দশক। অতঃপর, বেলুড় মঠের তদানীন্তন সহ-অধ‌্যক্ষ শ্রীমৎ প্রমেয়ানন্দজির কাছে দীক্ষাগ্রহণ ও মন্ত্রশিষ‌্যত্বলাভ। বর্তমানে শ্রীরামকৃষ্ণ-শ্রীমা-স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ও বাণীর প্রচারক হিসেবে তিনি পাকাপাকিভাবে কলকাতানিবাসী। তাঁর উদ‌্যোগে নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে চলেছে ত্রৈমাসিক পত্রিকা আনন্দম। শ্রীআনন্দর অন‌্যান‌্য উল্লেখযোগ‌্য গ্রন্থ : ‘অমৃতরসধারা’ (শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত-র গীতিরূপান্তর), ‘গীতিকা’, ‘নিভৃতে’, ‘ও’ দুটি  চরণে’, ‘কিছু কথা ছিল’ এবং ‘এইটুকু মোর চাওয়া’। লাইফ টাইম অ‌্যাচিভমেন্ট অ‌্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত কাজি নজরুল পদক, সুরভারতী সংগীত পরিষদ প্রদত্ত গীতভারতী পুরস্কার, অদ্বৈত মল্লবর্মন জন্মশতবর্ষ স্মারক পুরস্কার-সহ বহু সম্মাননায় সম্মানিত ।