সমরেশ বসু / SAMARESH BASU
শতাধিক উপন্যাস, দ্বি-শতাধিক ছোটো-বড়ো গল্প, অগণিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ, চিত্রনাট্য-সহ বিপুলায়তন সমরেশ বসুর সাহিত্যভুবন ও সৃষ্টিসম্ভার। গঙ্গা, বি. টি. রোডের ধারে, বিবর, প্রজাপতি, বাথান, মহাকালের রথের ঘোড়া, টানাপোড়েন প্রভৃতি তাঁর সমসময়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী রচনা। প্রতিটি উপন্যাসই মানব অস্তিত্ব ও সম্ভাবনার এক-একটি অনন্য দলিল। অজস্র ছোটোগল্পে বিধৃত হয়েছে তাঁর সমাজসচেতন মানবিক শিল্পীমনের বিস্মিত প্রতিভা। অসমাপ্ত শেষ উপন্যাস দেখি নাই ফিরে-তে বাংলা সাহিত্যে নতুন বাঁকের সন্ধান করেছিলেন। 'কালকূট' ছদ্মনামেও লিখেছেন অমৃতকুম্ভের সন্ধানে থেকে শুরু করে স্বর্ণশিখর প্রাঙ্গণে, কোথায় পাব তারে, অমাবস্যায় চাঁদের উদয়, শাম্ব প্রভৃতি কালজয়ী, ব্যতিক্রমী উপন্যাস। 'ভ্রমর' ছদ্মনামে রচিত কথাসাহিত্যে ইতিহাস ও পুরাণ থেকে প্রেম ও যন্ত্রণার উপাখ্যান রচনা করেছেন মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে। আবার বাংলা কিশোর সাহিত্যে তাঁর সৃজিত 'গোগোল' গোয়েন্দা সাহিত্যের এক জনপ্রিয় এবং অনবদ্য চরিত্র। সমরেশ-সৃষ্ট অপর গোয়েন্দা চরিত্র অশোক ঠাকুর-ও পাঠকমহলে সমধিক জনপ্রিয়।
তিনি গঙ্গা উপন্যাসের জন্য পান আনন্দ পুরস্কার (সর্বপ্রথম)। শাম্ব উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন। জ্ঞানপীঠ পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল অন্তত ছ-বার। দুর্ভাগ্যবশত শেষপর্যন্ত তা আর পাননি।
১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ মাত্র চৌষট্টি বছর বয়সে সমরেশ বসু প্রয়াত হন।
(তথ্য সংগ্রহ ও নিবেদন: নবকুমার বসু)