পাঠক এই বই পড়ে অনুধাবন করতে পারবেন নদী কীভাবে মায়ের মতো আবহমান কাল ধরে লালন করে এসেছে সভ্যতা। মানুষের মতোই স্বতন্ত্র এক সত্তার অধিকারী সে।
নদী তার সতত প্রবাহমানতায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ভূত জল ও বস্তুকণাকে ধারণ করে প্রকৃতির অন্যান্য উপাদান ও প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে স্বতন্ত্র করেছে। সমাজ ও পরিবেশে মানুষ ও নদীর অবস্থান শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে-দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান- দুটি বিষয় বিবেচনার যোগ্য। প্রকৃতিতে মানুষ ও নদীর দৃশ্যমান উপস্থিতি তাদের কর্মচঞ্চলতার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত। অন্যদিকে, যে উপাদান ও প্রক্রিয়াসমূহ নদী ও মানুষকে নেপথ্যে থেকে সমর্থন জুগিয়ে তাদের দৃশ্যমানতাকে প্রকাশযোগ্য রূপদান করে, সেগুলি অদৃশ্যমান। মানুষ ও নদীর দৃশ্যমান ঘটনাসমূহের মধ্যস্থ যে আন্তঃসংযোগ- যেমন, নদীতে স্নান করা, মাছ ধরা, ভ্রমণ করা- সেসবের থেকেও মানুষ-নদী সংযোগ অধিকতর সক্রিয়, তাদের সতত চলমান অদৃশ্য প্রক্রিয়াসমূহের মাধ্যমে। উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবনের বিকাশে নদীর ভূমিকা, অতিরিক্ত জলের বানে নিজেকে বাঁচানোর জন্য নতুন নদীখাত সৃষ্টি, প্লাবনভূমি গঠন করে সাগরাভিমুখে এগিয়ে যাওয়া- এসব নদীকে মানুষের মতোই জীবন্ত এক সত্তা প্রদান করেছে।
এভাবে বঙ্গীয় জনপদে সমাজ ও সংস্কৃতি নির্মাণে মানুষের মন তথা মনন, ভাষা ও শিল্প সহযোগে নদীমাতৃক স্থানিক পরিসরে মানুষ-নদীকে একাকার করে দিয়েছে। সেই একাত্মবোধই বঙ্গীয় জনপদের সমাজ-সংস্কৃতি তৈরি করেছে। অন্তঃদৃষ্টির অভাবে বহু ক্ষেত্রেই মানুষ এই আন্তঃসংযোগের গভীরতা সম্যক অনুধাবন করতে পারে না।
ফলশ্রুতিস্বরূপ, নদীর উপর নেতিবাচক কার্যকলাপ পরিচালনার মাধ্যমে তাকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিতেও আমরা আজ দ্বিধাবোধ করি না।
‘নদীর সাথে হাঁটা’-র মাধ্যমে নদীরক্ষায় অঙ্গীকারগ্রহণ এবং সে বিষয়ে গণসচেতনতা ও জনমত গঠনে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
 
             বৈশম্পায়ন কহিলেন / BOISHAMPAYAN KOHOLEN
বৈশম্পায়ন কহিলেন / BOISHAMPAYAN KOHOLEN                             
 
                 
             
             
             
             
             
            
Reviews
There are no reviews yet.