কথারূপ সরিৎসমূহের সাগর-ই কথাসরিৎসাগর। মহাকবি সোমদেব ভট্ট বিরচিত এই মহাগ্রন্থের স্বাদু অনুবাদ ও পুনঃকথন এই প্রথম বাংলায়। গল্পের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসছে আর-একটি গল্প। তা থেকে আরও একটি _এরকমভাবে গল্পের প্রবাহ সৃষ্টি করেছে অসংখ্য তরঙ্গের যারা মিলেমিশে তৈরি করেছে কথাসাহিত্যের এক অতলান্ত সমুদ্র যা বহু ক্ষেত্রেই আদি ও বীভৎসরসে সিঞ্চিত। এতৎসত্ত্বেও গৃহী পাঠকের জন্য এখানে উপস্থিত হিতকথা, নীতিবাক্য ও শাস্ত্রীয় উপদেশ।
মনস্বী প্রাবন্ধিক শিবনারায়ণ রায়ের সাহিত্য, সাহিত্যতত্ত্ব ও চিত্রকলা বিষয়ক এই লেখাগুলি পাঠ করলে ভেঙে যেতে পারে আমাদের এতদিনের লালিত অনেক অলস, অভ্যস্ত, বিগ্রহপূজারি ধারণা। তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণে জারিত, চিরায়ত ও আধুনিক বিশ্বসাহিত্যের অনায়াস উল্লেখে প্রোজ্জ্বল, ভারতীয় ও ইউরোপীয় রেনেসাঁস সম্পর্কে স্বতন্ত্র ও তুলনামূলক আলোচনায় দিগদর্শী এবং রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও শিল্পকর্মের মোহমুক্ত মূল্যায়নে ঋদ্ধ বারোটি অমূ্ল্য প্রবন্ধের সংকলন এই গ্রন্থ।
কমলকুমার মজুমদারের শুধুমাত্র প্রকাশিত গ্রন্থ থেকে নয়, তাঁর বহু অপ্রকাশিত ও অগ্রন্থিত রচনা থেকে তথ্য আহরণ করে এই বইটি রচিত। তাই কমলকুমারের সামগ্রিক জীবন ও শিল্পীসত্তাকে জানতে এবং কমলকুমারের ধ্রুপদি রচনায় মনোনিবেশ করতে সেসব তথ্য পাঠককে অনেকটাই আলো দেখাবে। এই বই তাই কমলকুমারের লেখক ও শিল্পীজীবনে প্রবেশের এক সংক্ষিপ্ত পরিচয়-কথা। স্বাদু ও সহজ গদ্যে লেখক তুলে ধরেছেন সেই সংক্ষিপ্ত সাহিত্য–জীবন-শিল্প-কথার ধারাবিবরণ।
ধর্ম বলতে স্বামীজি কোনো বিশেষ মতবাদকে বোঝাতে চান কি না, সে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘সব ধর্মের সংকীর্ণতা দূরীভূত করে এক উদার মানবধর্ম প্রচার করার জন্য শ্রীরামকৃষ্ণদেব ধরাধামে আবির্ভূত হয়েছিলেন_আমি শুধু সে কথাটিই প্রচার করতে চাই। আমার মতে ধর্ম যদি মানুষের অন্তরে শক্তি জোগাতে না পারে, তবে তা ধর্মই নয়।’ প্রকৃত অর্থে তথাকথিত অচলায়তন ধর্মের প্রতি প্রবল অনাস্থাতেই বিশ্বপরিব্রাজক এই সন্ন্যাসী মানবসেবার কর্মযজ্ঞে নিবেদন করেছিলেন নিজেকে। মানবতাবাদী এই মহাজনের বহু আলোচিত জীবনালেখ্যকে এক নতুন বাকবিন্যাসে, অভিনব বিশেষণে দিশাহীন নবপ্রজন্মের ভরসা-স্থল করে তুলতে চেয়েছেন কর্মযোগী বিবেকানন্দ গ্রন্থের প্রণেতা। গ্রন্থের পরিশেষে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবেই লেখক সংযোজন করেছেন স্বামীজির অমূল্য বাণী এবং তাঁর প্রতি বিভিন্ন মনীষী ও বিশিষ্টজনের উল্লেখযোগ্য অভিমত। ভগিনী নিবেদিতা, সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ও মহাত্মা গান্ধি প্রমুখ বিশিষ্টজনের সশ্রদ্ধ অভিমতের আলোয় দীপিত হবেন পাঠক।