সঞ্চয়িতা / SANCHAITA
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সংকলন মাত্রেরই নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকে। চয়নিকা (১৯০৯) যখন প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন তার আগে পর্যন্ত যে ক-টি কাব্যগ্রন্থ বেরিয়েছে সেগুলি থেকে চয়ন করে একশো তিরিশটি কবিতা গ্রহণ করা হয়।… এলাহাবাদের ইন্ডিয়ান প্রেসে মুদ্রিত চয়নিকা জনসমাদর লাভে বঞ্চিত হয়নি। এরপর বিশ্বভারতী যখন তৃতীয় সংস্করণ চয়নিকা (১৯২৫) প্রকাশের দায়িত্ব নেয়, তখন তাতে শুধু কবিতার সংখ্যাই বাড়ানো হয়নি, কবিতা নির্বাচনের রীতিরও বদল হয়েছে।… নব-কলেবর চয়নিকা-কে রবীন্দ্রনাথ মেনে নিলেও কবিতা-নির্বাচনের পদ্ধতি সম্ভবত রবীন্দ্রনাথের ভালো লাগেনি।… চয়নিকা বাজারে থাকা সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথ নতুন কবিতা-সংকলনের কথা ভেবেছেন। আর তারই ফলে সঞ্চয়িতা-র পরিকল্পনা। এবার কবিতাগুলো সংকলনের ভার কবি নিজে নিয়েছেন।…সঞ্চয়িতা প্রথম প্রকাশের (১৯৩১) পর অন্যদের কথা সুরে থাক, রবীন্দ্রনাথেরও মনে হয়েছে, অনেক ভালো কবিতা সংকলনের বাইরে পড়ে রইল। পরের দুটি সংস্করণে কিছু গ্রহণ-বর্জন সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথের অতৃপ্তি যায়নি।… বিশ্বভারতী প্রকাশিত সঞ্চয়িতা-র সীমাবদ্ধতা (যে-সীমাবদ্ধতার কথা রবীন্দ্রনাথ নিজে ১৩৩৮ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে লেখা ভূমিকায় জানিয়েছেন) মনে রেখেও সঞ্চয়িতা-র যেহেতু কোনো বিকল্প নেই, আমরা সঞ্চয়িতা পুনর্মুদ্রণের কাজে অগ্রসর হয়েছি।…স্থান সংকুলানের বাধ্যতায় ‘সংযোজন’ অংশে মাত্র আঠারোটি কবিতা রাখতে সক্ষম হয়েছি।… ‘পাঠ-পরিচয়’ অংশে যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে রবীন্দ্রনাথের নিজের দেওয়া কাব্যব্যাখ্যা. অন্যক্ষেত্রে বিশিষ্ট সমালোকদের মন্তব্য সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। হয়েতা রবীন্দ্রকাব্য-প্রবেশিকা হিসেবে এই অংশের কিছু মূল্য আছে।
সুকান্ত সমগ্র / Sukanta Samagra
সম্পাদনা ড. উজ্জ্বলকুমার মজুমদার
যে রাজনৈতিক স্লোগান বা সংহত, সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক বার্তা সুকান্তর কবিতায় দীপ্ত হয়ে ওঠে তা তখনকার উদ্দীপ্ত জনজীবনের স্বপ্নেরই বার্তা, তখনকার সময়েরই দান। তাঁর কবিতায় হয়তো কখনো কখনো রং-তুলির কৈশোরক স্পর্শ কম লেগেছে, কিন্তু আন্তরিকতার অভাব ছিল না। রাজনীতি আর কাব্যিক আবেগের মধ্যে কোনো বিরোধ আছে বলে মনে হয়নি তাঁর। কেনই বা মনে হবে! জীবন-স্বপ্নই তো রাজনীতি। আর, সুকান্ত-র কাছে তাঁর কবিতা তো সেই জীবন-স্বপ্নেরই প্রকাশ। যে ছাড়পত্র দিয়ে কবিতার আসরে নেমেছিলেন তিনি, তাতে ‘এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি_ নবজাতকের কাছে’_এই অঙ্গীকারই ছিল। মাটির রসের মধ্যে ভাবী বনস্পতির সম্মতি পেয়েছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের উচ্চারণেই তিনি ভবিষ্যৎ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছিলেন। ‘যদিও রক্তাক্ত দিন, তবু দৃপ্ত তোমার সৃষ্টিকে/এখনো প্রতিষ্ঠা করি আমার মনের দিকে দিকে।’ যে ‘বলিষ্ঠ’ শিশুদের জন্যে বাসযোগ্য পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছিলেন সুকান্ত, সেই শিশুদেরই তাঁর কবিতায় দেখা গেল অশ্বত্থ-শিশুর প্রতীকে। উদ্ধত প্রাচীন প্রাসাদের গায়ে অবাধ্য ফাটল ধরিয়ে গোপন শক্তির বারুদ জমিয়ে তারা রক্ত-ঘাম-চোখের জলের ধারায় বিদ্রোহের দূত হয়ে আসছে।
অন্য প্রেম / ANNYA PREM
চিরায়ত প্রেমের গল্পসংগ্রহ
সম্পাদনা: উজ্জ্বলকুমার মজুমদার
৩৬টি ছোটোগল্পে ছুঁয়ে নেওয়া চিরায়ত বাংলা প্রেমের গল্পের আশ্চর্য ভুবন।
BHASKAR CHAKRABORTIR NIRBACHITA KABITA SANGRAHA – (মেঘ বসু)
শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা থেকে জিরাফের ভাষা – বাংলা কবিতাসাহিত্যের নক্ষত্রময় আকাশে তাঁর বিস্ময়কর উড়ান । আজও তরুনতম কবি , ধীমান পাঠক সমান উৎসুক ও অনুসন্ধানী তাঁর কবিতার অভিমুখে । নির্জনতার কাছে বার বার লুঠ হয়েছে তাঁর মন । |
ছোটোদের আবৃত্তির কবিতা কবিতার আবৃত্তি
হে প্রেম (He prema)
সম্পাদনা: মেঘ বসু
প্রেমই সেই আবহমান আহ্বান আমি থেকে তুমি হয়ে উঠতে উঠতে যা পেরিয়ে যায় নিষেধের লক্ষ্মণরেখা, ছিঁড়ে ফেলে ভুরু-কুঁচকানো প্রতিবিপ্লবী প্রহরা, উড়ানের এ-নব অধ্যায়ে খুঁজে নেয় পাখা, খোঁজে মহানভ অঙ্গন। রবীন্দ্রনাথ থেকে নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত ব্যাপ্ত এই সংগ্রহটি পাঠকের কাছে হয়ে উঠতে পারে এক আশ্চর্য ভ্রমণ।
প্রিয় কবি প্রিয় কবিতা / PRIYA KABI PRIYA KABITA
আধুনিক বাংলা কাব্যের অনেক সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। সেইসব সংকলনে মাইকেল মধুসূদন দত্তকে আধুনিক কাব্যের পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য করে পরবর্তীকালে কবিদের গ্রন্থভুক্ত করা হয়েছে। এই সংকলনের সম্পাদক পণ্ডিতবর্গের সেই সিদ্ধান্তকে শিরোধার্য করে নিয়েছেন। আধুনিক যুগের কবিতা বলতে আমরা জেনেছি, একটি কালসীমা মাত্র নয়; বিশেষ কতকগুলি মনোভঙ্গি, যা রাষ্ট্র ও সমাজ-কাঠামোর পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে উদ্ভূত। ‘আধুনিক’ শব্দটি সময়নির্দেশক হলেও সময়ই এর একমাত্র পরিমাপক নয়। ‘আধুনিক কাব্য‘ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ‘বাঁক’ বা ‘মর্জি’র কথা বলেছেন। ‘বিশ্বকে ব্যক্তিগত আসক্তভাবে না দেখে বিশ্বকে নির্বিকার তদ্গতভাবে দেখা’ কাব্য সম্পর্কিত অনুভবের এটাই মূল কথা রবীন্দ্র-চিন্তনে। পরবর্তীকালে তাঁর কাব্যসম্পর্কিত মতাদর্শ আরও আলোচিত ও বিশ্লেষিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকতা আধুনিকতার অন্যতম শর্ত। তার সঙ্গে যুক্ত হয় ব্যক্তি-মানসের প্রতিফলন ও আঙ্গিকচর্চা। আধুনিক কবিতা সম্পর্কে বুদ্ধদেব বসু জানিয়েছেন, ‘একে বলা যেতে পারে বিদ্রোহের, প্রতিবাদের কবিতা, সংশয়ের, ক্লান্তির, সন্ধানের, আবার এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে বিস্ময়ের জাগরণ, জীবনের আনন্দ, বিশ্ববিধানে আস্থাবান চিত্তবৃত্তি।’ নির্দিষ্ট কোনো ছকে আধুনিক কবিতাকে বাঁধা সম্ভব নয়। বর্তমান সংকলনে মাইকেল মধুসূদন থেকে শুরু করে বিংশ শতকের শেষ দশকের কবিদের কবিতাও সংকলন-ভুক্ত করা হয়েছে এই লক্ষ্যে যে, দীর্ঘ কালসীমায় বিভিন্ন কবির রচিত কবিতায় কাব্যপ্রবাহের ধারাবাহিকতা ও বিবর্তনকে উপলব্ধি করা সহজতর হবে। বলা বাহুল্য, এই সংকলনে সম্পাদকের পরিকল্পনা, মর্জি এবং ভালো-লাগা নির্ভর করে কবি এবং কবিদের রচনা নির্বাচন করা হয়েছে। সে কারণে এ গ্রন্থের নামকরণ করা হয়েছে প্রিয় কবি প্রিয় কবিতা। এর ভালোমন্দের সবটুকু দায়-দায়িত্বই সম্পাদকের।
হে নৈঃশব্দ্য (He naihsabdya)
সংকলন ও সম্পাদনা: মেঘ বসু
হয়তো নৈ:শব্দ্যই সেই অনন্ত অপেক্ষা, বিরহকে যা ধারণ করে তীব্র দহনজ্বালায়, আবার কখনো-বা চিরনির্বাণের কুহকিনী আশ্বাসে। রবীন্দ্রনাথ থেকে উত্তর-শূন্য দশক পর্যন্ত ব্যাপ্ত এই সংগ্রহটি পাঠকের কাছে হয়ে উঠতে পারে এক আশ্চর্য ভ্রমণ।