এই গ্রন্থের সামাজিক অবক্ষয়ের কদর্যতম রূপ। কিছু নিবন্ধ আবার মাধুর্য ও মানবিক সম্পদে সমৃদ্ধ। একের পর এক প্রবন্ধে আলোকিত হয়েছে এতাবৎ অজ্ঞাত বিবিধ বিষয়- তা সে পৃথিবীর প্রাচীনতম মৃৎপাত্রই হোক, কিংবা কলকাতার মৃত্যুজগৎ।
যশস্বী সাংবাদিক গোপালকৃষ্ণ রায়ের জন্ম ওপার বাংলায়। কিন্তু তাঁর মনন ও চেতনা পরিপু্ষ্ট হয়েছে এপার বাংলার কৃষ্ণনগরে- এক ঐতিহ্যময় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে।
প্রাবন্ধিক হরিপদ দে-র বিচিত্রগামী অনুসন্ধিৎসা আমাদের প্রণোদিত করেছে নৃতত্ত্ব, বাংলা সাহিত্য প্রাচীন যুগ, বাংলা সাহিত্য মধ্য যুগ, বাংলা সাহিত্য আধুনিক যুগ, বাংলা লোকসাহিত্য, বিবিধ এবং রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ প্রসঙ্গ- সকল প্রবন্ধকে এই সাতটি শীর্ষকের অর্ন্তভুক্ত করতে। প্রবন্ধগুলির সহজ সরল ভাষা, বক্তব্যবিষয়ের সরল উপস্থাপনা এবং বিষয়-অতিরিক্ত মননঋদ্ধতা প্রাবন্ধিক হিসেবে লেখকের জাত চিনিয়ে দেয়।
গ্রন্থটি দু-টি খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডে আলোচিত হয়েছে পাখি ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা। সেই সূত্রে এসেছে পুরাণ, সাহিত্য ও শিল্পের বিবিধ প্রসঙ্গ। দ্বিতীয় খণ্ডে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সর্বমোট ৯২টি বিহঙ্গকথা বা পাখি বিষয়ক গল্প সংকলিত হয়েছে।
কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর সান্নিধ্যে এসে বদলে যায় প্রখ্যাত বিজ্ঞানীর জীবনের গতিপথ। শিল্পীর মানবসত্তা ক্রমশ প্রকাশিত, উন্মোচিত হতে থাকে তাঁর কাছে। এই গ্রন্থে ধরা রয়েছে সেই নবপরিচয়ের স্মৃতি এবং মানুষ মান্না দে-র অকৃত্রিম জীবন ও সময়ের বর্ণিল জলছবি।
ব্রিটিশ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের পূর্বে সমগ্র বঙ্গদেশে, বিশেষত মেদিনীপুরে, দেশজ শিক্ষার এক সমৃদ্ধ ধারা প্রবহমান ছিল, তা ভেঙে পড়ল কেন ? ১৮৩৫ সালের অ্যাডামস-এর রিপোর্ট অনুসারে জানা যায়, অতীতে মেদিনীপুর শিক্ষার দিক থেকে সর্বাগ্রে ছিল। তাহলে এখানে ব্রিটিশ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের আগে কেন কালের করাল গ্রাসে এর অবলুপ্তি ঘটল ? এই গ্রন্থে আছে, প্রাক্ঔপনিবেশিক আমলে মেদিনীপুরে দেশজ শিক্ষার ধারা প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা, নারীশিক্ষার অগ্রগতি এবং লোকশিক্ষার অবস্থা। সেইসঙ্গে মেদিনীপুরের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলিও বিস্তারিতভাবে আলোচিত।