উত্তরপাড়া জমিদার বাড়ির অন্দর মহল / UTTARPARA JAMIDAR BARIR ANDAR MAHAL
₹440.00বাংলার জমিদার বা রাজপরিবারের সামন্ত্রতান্ত্রিক ভোগবাদী জীবনযাপনের যে তথাকথিত আভিজাত্যের প্রচলিত ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের আপাত পরিচয় ।
বাংলার জমিদার বা রাজপরিবারের সামন্ত্রতান্ত্রিক ভোগবাদী জীবনযাপনের যে তথাকথিত আভিজাত্যের প্রচলিত ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের আপাত পরিচয় ।
ড. দিলীপ কুমার মিত্র
কোনো কোনো উদ্বৃতি সংকলন দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজকে ভূমিকম্পের মতো নাড়িয়ে দেয়। যেমনটি ঘটেছিল গত শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকে। লাল মলাট দেওয়া জনৈক চিনা দার্শনিক ও রাষ্ট্রনীতিবিদদের উদ্ধৃতির সংকলন-গ্রন্থটি সমগ্র বিশ্বের যুবমানসে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। শ্রীরামকৃষ্ণের বাণীসমূহ গভীর অধ্যাত্মভাবসম্পন্ন ও জীবনবোধে অনন্য; রামকৃষ্ণকথামৃত গ্রন্থে সংকলিত তাঁর মুখনিঃসৃত কথাগুলি এক মহাসাধকের প্রজ্ঞানিষিক্ত ভাবনার সহজ মহিমান্বিত উদাহরণ। রবীন্দ্রনাথের উদ্ধৃতি জ্যোতির্ময় আলোকশিখার মতো উদ্দীপ্ত_ সেগুলি তারায় তারায় দীপ্তশিখার অগ্নি জ্বালিয়ে চিরকালের মানুষকে পথ দেখায়। একদা গৈরিক বেশধারী এক দিব্যচেতন প্রাচ্য সন্ন্যাসীর উদ্ধৃতিযোগ্য সংক্ষিপ্ত ভাষণ ও ভ্রাতৃত্বের আহ্বান ধনতান্ত্রিক সভ্যতার বুকে কাঁপন তুলেছিল; সামাজিক সাম্যের পক্ষে তাঁর সংকলিত উদ্ধৃতি শতাধিক বছর পেরিয়ে আজও মানুষকে উদ্দীপ্ত করে, উদ্বুদ্ধ করে। কালপ্রয়াত এক তরুণ কুমার কবির আগুনের মতো উক্তি পাঠকের চেতনায় নাড়া দেয়_ তা পড়ে ‘বিশ্ব স্পন্দিত বুকে মনে হয় আমিই লেনিন’।
সংকলন ও ভূমিকা শৈলেন ঘোষ
উপেন্দ্রকিশোর রায়চেৌধুরী (১২মে ১৮৬৩_২৩ ডিসেম্বর ১৯১৫) : শিশুসাহিত্যিক, সম্পাদক, চিত্রকর, শিল্পী, সংগীতজ্ঞ, তথা মুদ্রণশিল্প বিশারদ উপেন্দ্রকিশোরের জন্ম অবিভক্ত বঙ্গের মসুয়া গ্রামের সুবিখ্যাত রায় (পূর্বতন ‘দেনা’ বা ‘দেও’) পরিবারে। পিতা কালীনাথ (শ্যামসুন্দর মুনশি) মাতা জয়তারা। কালীনাথ ও জন্মতারার পাঁচ পুত্র, তিন কন্যার মধ্যে উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন মধ্যম। পিতৃদত্ত নাম কামদারঞ্জন। কামদা যখন চার বছেরর শিশু, কালীনাথের জ্ঞাতিভাই জমিদার হরিকিশোর রায়চৌধুরী তাকে দত্তক নেন। নামকরণ করেন উপেন্দ্রকিশোর। মায়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উপেন্দ্রকিশোর কলকাতায় এসে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভরতি হন। কিন্তু বিএ পাস করেন ক্যালকাটা মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট থেকে ১৮৮৪ সালে। পরের বছরই তাঁর বিবাহ হয় ব্রাহ্মনেতা দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের জ্যেষ্ঠা কন্যা বিধুমুখী দেবীর সঙ্গে। সুখলতা, সুকুমার, পুণ্যলতা, সুবিনয় ও শান্তিলতা_তিন কন্যা, দুই পুত্রকে নিয়ে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এক সুখের সংসার। মুখ্যত শিশুসাহিত্যকে কেন্দ্র করেই উপেন্দ্রকিশোরের সাহিত্যপ্রতিভার স্ফুরণ ও বিকাশ। কলেজে পড়তে পড়তেই ১৮৮৩ সালে শিশুদের পত্রিকা সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল প্রথম রচনা। পরবর্তীকালে তিনি লিখেছিলেন সখা ও সাথী, মুকুল প্রভৃতি পত্রিকাতেও। ১৮৮৫-এ প্রকাশিত হল তাঁর লেখা ছোটোদের রামায়ণ । ওই একই বছের তাঁর নিজস্ব মুদ্রণ সংস্থা U. Ray & Sons.-এর প্রতিষ্ঠা। এরপর একে একে বেরোল ছোটোদের মহাভারত, সেকালের কথা, টুনটুনির বই । ১৯১৩-য় নিজের সম্পাদনায় উপেন্দ্রকিশোর প্রকাশ করলেন ছোটোদের জন্য সচিত্র মাসিক পত্রিকা সন্দেশ, নিঃসন্দেহে যা তাঁর স্মরণীয়তম কীর্তি। এর দু-বছর আট মাস বাদে যখন তাঁর জীবনাবসান ঘটে, ততদিনে এ পত্রিকার ৩২টি সংখ্যা তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত। ২২নং সুকিয়া স্ট্রিটের বাড়ি থেকে গোড়ার দিকে সন্দেশ প্রকাশিত হয়। মুদ্রক ও প্রকাশক ছিলেন ললিতমোহন গুপ্ত। পত্রিকাটি মুদ্রিত হত ৬৪/১ নং সুকিয়া স্ট্রিটে অবস্থিত লক্ষ্মী প্রিন্টিং ওয়ার্কস থেকে। ছড়া, রূপকথা, লোককথা, ইতিহাস, পুরাণ, আবিষ্কারের গল্প কিংবা নিখাদ কল্পকাহিনি_ শিশুসাহিত্যের এমন কোনো শাখার কথাই ভাবা যায় না, যা উপেন্দ্রকিশোর লেখনীর জাদুস্পর্শে নবপ্রাণে সঞ্জীবিত হয়নি। ছোটোদের রামায়ণ থেকে শুরু করে তাঁর লেখা সব গ্রন্থগুলির বাংলা শিশুসাহিত্যের চিরায়ত সম্পদ। তেমনই তাঁর গুপি গাইন বাঘা বাইন, বোকা জোলা, ঘ্যাঁঘাসু প্রমুখ চরিত্র তাদের জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে আজ অবধি অবিস্মরণীয়।
এ কালের এক প্রবীন লিজেন্ডের নিজের দেখা ও বাবার কাছে শোনা মজার মজার কান্ড , প্রায় অবিস্সাস্য ঘটনা I